
ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা করা
ইসলাম আল্লাহ তায়ালার মননীত ধর্ম। এটা কোন মানব সৃষ্ট ধর্ম যে যার যখন মন চাইবে তখন তাতে কাস্টমাইজ করবে। এবং ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা করবে। যে ধর্মকে বিকৃত করে নিজের সুবিধানুযায়ী ধর্ম মেনে চলে প্রকৃত পক্ষে সে মুসলিম নয়।
আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে ধর্ম দিয়েছেন মানুষের হেদায়াতের জন্য ধর্মকে নিজের মত করে ব্যবহার করারজন্য নয়। যেমনটা করেছে পূর্বে আহলে কিতাবীরা।
তাই তারা কখনোই প্রকৃত আল্লাহর বান্দা হতে পারেনী। আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীনকে আপনি পরিবর্তন না করলে এ দ্বীন (ইসলাম) আপনাকে ঠিকই পরিবর্তন করবে যদি না আপনার অন্তরে কোন মুনাফিকি না থাকে।
দুনিয়াতে কত রকম মানুষ। কেউ নামায পড়ে, কেউ পড়েনা, কেউ ভাল কাজ করে আর কেউ খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে জীবনকে শেষ করে দেয়।
ইসলাম সৎকর্মশীল হিসেবে রুপান্তরিত করতে শিখায় ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা করা নয়।
তাই ইসলাম এসেছে মানুষকে প্রকৃত সৎকর্মশীল হিসেবে রুপান্তরিত করতে। মহান আল্লাহ তায়া’লা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন:
زُيِّنَ لِلَّذِينَ كَفَرُواْ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَيَسْخَرُونَ مِنَ الَّذِينَ آمَنُواْ
وَالَّذِينَ اتَّقَواْ فَوْقَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
وَاللّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَاء بِغَيْرِ حِسَابٍ
পার্থিব জীবনের উপর কাফেরদিগকে উম্মত্ত করে দেয়া হয়েছে। আর তারা ঈমানদারদের প্রতি লক্ষ্য করে হাসাহাসি করে।
পক্ষান্তরে যারা পরহেযগার তারা সেই কাফেরদের তুলনায় কেয়ামতের দিন অত্যন্ত উচ্চমর্যাদায় থাকবে।
আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সীমাহীন রুযী দান করেন। [ সুরা বাকারা ২:২১২
সিরাতুল মুস্তাকিম এর শেষ প্রান্তে পৌছে দিয়ে আপনাকে আমাকে সফলকাম করতে। ইসলাম নিজে পরিবর্তন হতে আসেনি বরং আমাদেরকে পরিবর্তন করতে এসেছে।
আল্লাহর দেয়া বিধি-বিধান নিয়ে হাসি-ঠাট্টা শুধু এ যুগে নয়। বরং আদি যুগ থেকেই ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা ছিলো। সে সময়ের মুনাফিকদের কার্জ কালাপ
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের পাতায় পাতায় বর্ণনা করেছেন বিস্তারিত ভাবে।
যার বহির প্রকাশ ঘটছে বর্তমান জমানার মানুষের মাঝে। তারা হাসির ছলে না বুঝে ইসলাম বা মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয় নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে।
বন্ধুদের আড্ডায় আপনিও হয়তো শুনেছেন, ওই দেখ, হুজুরের কি সুন্দর ছাগলা দাড়ি!! সবার সাথে আপনিও হয়তো হেসে ফেললেন হো হো করে।
হাদিসে বর্ণিত রয়েছে:
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ …عَنْ جَابِرِ بْنِ سُلَيْمٍ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ
عَلَيْكَ السَّلاَمُ
فَقَالَ:لاَ تَقُلْ عَلَيْكَ السَّلاَمُ وَلَكِنْ قُلِ السَّلاَمُ عَلَيْكَ
জাবির ইবনু সুলাইম (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললাম:
আলাইকাস সালাম’।
তিনি বললেনঃ ‘আলাইকাস সালাম বল না, বরং ‘আসসালামু ‘আলাইকা’ বল।
আল্লাহ পাকের কাছে যে বিষয়গুলো অত্যন্ত নিন্দনীয়
বর্তমানে আমরা বিভিন্ন ফিতনায় লিপ্ত হচ্ছি। নিজের অজান্তেই কিংবা ইচ্ছা করে ইসলামের বিভিন্ন বিধিনিষেধ, সুন্নাহ নিয়ে বিদ্রুপ করি কিংবা ইসলাম ও ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা, কটুকথা বলি।
আপনি জানেন আল্লাহ পাকের কাছে যে বিষয়গুলো অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং তিনি যেগুলোর কারণে বান্দার সব আমল বাতিল করে দিতে পারেন,
এসবের অন্যতম হচ্ছে- দ্বীন ইসলাম বা ইসলাম সর্ম্পকিত কোনো বিষয় নিয়ে হাসি তামাশা করা।
শুধু কি আমল বাতিল হয়ে যাওয়া, বরং কোনো কোনো কথা ও ঠাট্টা তো আপনাকে ইসলাম থেকে বের করে দেবে আপনার অজান্তেই।
মহান আল্লাহ তায়া’লা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন:
وَلَئِن سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ
قُلْ أَبِاللّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ
আর যদি তুমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস কর, তবে তারা বলবে, আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করছিলাম।
আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? সুরা তাওবা ৯:৬৫
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ) বলেন:
আল্লাহ, তার কুরআন এর আয়াতসমূহ ও রাসুলুল্লাহ (সা.) কে কটাক্ষ করা কুফুরী।
এর মাধ্যমে কেউ ঈমান আনার পর ও কাফির হয়ে যায়। মাজমু’ ফাতাওয়া : ২৭৩/৭
ইমাম নাববী রহ. বলেন:
যদি কেউ মদের পাত্র আদান-প্রদানের সময় কিংবা ব্যভিচারে লিপ্ত হবার প্রাক্কালে আল্লাহকে তাচ্ছিল্য করে বিসমিল্লাহ বলে,
তবে সে কাফের হয়ে যাবে। রাওদাতুত তালিবীন : ৬৭/১০
শায়খ মুহাম্মদ বিন আব্দিল ওয়াহাব রহ. বলেন:
যে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাঃ এর দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত সামান্য কোনো বিষয়, আল্লাহ প্রদত্ত সাওয়াব প্রতিদান কিংবা ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা বা তার কোনো শাস্তির বিধানের প্রতি ঠাট্টা বিদ্রুপ করে, সে ব্যক্তি কাফের হবে।
এর দলীল আল্লাহ তায়া’লার বাণী:
وَلَئِن سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ
قُلْ أَبِاللّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِئُون
আর যদি তুমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস কর, তবে তারা বলবে, আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করছিলাম।
আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? সুরা তাওবা ৯:৬৫
لاَ تَعْتَذِرُواْ قَدْ كَفَرْتُم بَعْدَ إِيمَانِكُمْ إِن نَّعْفُ عَن طَآئِفَةٍ مِّنكُمْ
نُعَذِّبْ طَآئِفَةً بِأَنَّهُمْ كَانُواْ مُجْرِمِينَ
ছলনা কর না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার পর। তোমাদের মধ্যে কোন কোন লোককে যদি আমি ক্ষমা করে দেইও,
তবে অবশ্য কিছু লোককে আযাবও দেব। কারণ, তারা ছিল গোনাহগার। সুরা তাওবা ৯:৬৬
শায়খ মুহাম্মদ ইবন ইবরাহীম রহ. কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, যে দাড়িকে ঘৃণা করবে এবং বলবে এটি আবর্জনা, সে কি মুরতাদ হয়ে যাবে?
উত্তরে তিনি বলেন:
যদি সে জানে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক দাড়ি প্রমাণিত, তাহলে তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনীত দ্বীনকে অস্বীকার করার শামিল হবে।
ফলে তাকে মুরতাদ আখ্যা দেয়াই হবে যুক্তিযুক্ত। ফাতাওয়া শায়খ মুহাম্মদ ইবন ইবরাহীম : ১৯৫/১১
এজন্যই আলেমরা বলেন, নামাজ না পড়া কুফুরী নয়, কিন্তু নামাজ বা নামাজীদের নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য কিংবা তামাশা করা কুফুরী।
মুসলমানদের নিয়ে হাসি তামাশা ও ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা করা কিসের আলামত।
মুনাফেকদের প্রথম পরিচয় ছিল, তারা মুসলমানদের নিয়ে হাসি তামাশা করতো, তাদের বোকা ভাবতো।
আল্লাহ পাক তাদের উদ্দেশে বলেছেন:
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُواْ كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُواْ أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاء أَلا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاء وَلَـكِن لاَّ يَعْلَمُونَ
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, অন্যান্যরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন, তখন তারা বলে,
আমরাও কি ঈমান আনব বোকাদেরই মত! মনে রেখো, প্রকৃতপক্ষে তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বোঝে না। সুরা বাকারা ২:১৩
وَإِذَا لَقُواْ الَّذِينَ آمَنُواْ قَالُواْ آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْاْ إِلَى شَيَاطِينِهِمْ
قَالُواْ إِنَّا مَعَكْمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُونَ
আর তারা যখন ঈমানদারদের সাথে মিশে, তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আবার যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করে,
তখন বলে, আমরা তোমাদের সাথে রয়েছি। আমরা তো (মুসলমানদের সাথে) উপহাস করি মাত্রা। সুরা বাকারা ২:১৪
اللّهُ يَسْتَهْزِئُ بِهِمْ وَيَمُدُّهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ
বরং আল্লাহই তাদের সাথে উপহাস করেন। আর তাদেরকে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন যেন তারা নিজেদের অহংকার ও কুমতলবে হয়রান ও পেরেশান থাকে। সুরা বাকারা ২:১৫
ইমাম ইবনে কুদামাহ লিখেছেন:
যে আল্লাহকে স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় গালি দিল, কিংবা যে আল্লাহ বা তার রাসুল কিংবা দ্বীনের কোনো বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করল, সে কাফের হয়ে গেল। আল মুগনী
ইমাম নববী বলেন:
স্বেচ্ছায় কিংবা কেউ যদি স্পষ্টভাবে এমন কোনো কথা বলে যা আল্লাহ ও তার রাসুলের কোনো বিধানকে তুচ্ছ করে, তা অবশ্যই কুফুরী।
এই কাজটি অর্থাৎ আল্লাহ বা তাঁর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা কুরআন অথবা দ্বীন ও ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা, হাসি করা কুফরী। যদিও তা মানুষকে হাসানোর নিয়তে হয়ে থাকে।
যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে এ রকম বিদ্রুপের ঘটনা ঘটেছিল। একদা মুনাফেকরা তাঁকে এবং সাহাবীদেরকে লক্ষ্য করে বলল,
আমরা এ সমস্ত লোকদের চেয়ে অধিক পেট পূজারী, অধিক মিথ্যুক এবং যুদ্ধ ক্ষেত্রে এদের চেয়ে অধিক ভীতু আর কাউকে দেখিনি।
কাজেই আল্লাহ তাআ’লা, রিসালাত, অহী এবং দ্বীনের বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত পবিত্র। এগুলোর কোন একটি নিয়ে ঠাট্টা করা বৈধ নয়। যে এরূপ করবে, সে কাফের হয়ে যাবে।
কারণ তার কাজটি আল্লাহ, তাঁর রাসূল, কিতাব এবং শরীয়তকে হেয় প্রতিপন্ন করার প্রমাণ বহন করে। যারা এ ধরণের কাজ করবে,
তাদের উচিৎ আল্লাহর দরবারে তাওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে নিজেকে সংশোধন করা। তাদের উচিৎ আল্লাহর প্রতি ভয় ও সম্মান দিয়ে অন্তরকে পরিপূর্ণ করা।
কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে:
وَمَن يَعْمَلْ سُوءًا أَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللّهَ يَجِدِ اللّهَ غَفُورًا رَّحِيمًا
যে গোনাহ, করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়। সুরা নিসা ৪:১১০
বিদ্রুপকারীর শাস্তি ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।
আর যখন তোমরা নামাজের জন্য আহ্বান করো, তখন তারা একে হাসি-তামাশা ও ক্রীড়ার বস্তুরূপে গ্রহণ করে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَتَّخِذُواْ الَّذِينَ اتَّخَذُواْ دِينَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا
مِّنَ الَّذِينَ أُوتُواْ الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاء وَاتَّقُواْ اللّهَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
হে মুমিনগণ, আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে
এবং অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হও। সুরা মায়েদা ৫:৫৭
ইসলামের বিধি-বিধান নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা মুনাফিক, কাফেরদের কাজ। মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন:
وَإِذَا رَأَوْكَ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَذَا الَّذِي بَعَثَ اللَّهُ رَسُولًا
তারা যখন আপনাকে দেখে, তখন আপনাকে কেবল বিদ্রুপের পাত্ররূপে গ্রহণ করে, বলে, এ-ই কি সে যাকে আল্লাহ রসূল’ করে প্রেরণ করেছেন? সুরা ফুরকান ২৫:৪১
إِن كَادَ لَيُضِلُّنَا عَنْ آلِهَتِنَا لَوْلَا أَن صَبَرْنَا عَلَيْهَا وَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
حِينَ يَرَوْنَ الْعَذَابَ مَنْ أَضَلُّ سَبِيلًا
সে তো আমাদেরকে আমাদের উপাস্যগণের কাছ থেকে সরিয়েই দিত, যদি আমরা তাদেরকে আঁকড়ে ধরে না থাকতাম।
তারা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন জানতে পারবে কে অধিক পথভ্রষ্ট। সুরা ফুরকান ২৫:৪২
ইসলাম নিয়ে বিদ্রূপ করা কবিরা গুনাহ এবং আল্লাহর সীমারেখার লঙ্ঘন। এটি কুফরের গর্ত; যে গর্তে না জেনে না বুঝে অনেক জাহেল ও মূর্খ লোক পড়ে যায়।
ইমাম ইবনে হাজম আল যাহেরী বলেন
প্রত্যক্ষ দলিলের ভিত্তিতে বিশুদ্ধভাবে সাব্যস্ত: যে ব্যক্তির নিকট দলিল পৌঁছার পরও সে ব্যক্তি যদি মহান আল্লাহকে
কিংবা কোন ফেরেশতাকে কিংবা কোন নবীকে কিংবা কুরআনের কোন আয়াতকে কিংবা ইসলামের কোন একটি ফরজ বিধানকে বিদ্রূপ করে সে ব্যক্তি কাফের।
আল-ফাসল ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়া ওয়ান নিহাল ৩/১৪২
শাইখ সুলাইমান আলে-শাইখ বলেন:
যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে, কিংবা আল্লাহর কিতাবের সাথে কিংবা তাঁর রাসূলের সাথে, কিংবা তাঁর ধর্মের সাথে বিদ্রূপ করে:
সকল আলেমের ইজমার ভিত্তিতে সে কাফের। যদিও সে এর দ্বারা প্রকৃতপক্ষে বিদ্রূপ করা উদ্দেশ্য না করে থাকুক। তাইসীরুল আযিযিল হামিদ, পৃষ্ঠা-৬১৭
ইসলাম অন্যের ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে শেখায় : মুসলমান হওয়ার জন্য যে মৌলিক সাতটি বিষয়ের ওপর ইমান আনতে হয় তার অন্যতম হলো,
পূর্ববর্তী নবী ও আসমানি গ্রন্থগুলোর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা। কাজেই ইসলামের শিক্ষা হলো, কারো ধর্মবিশ্বাস নিয়ে হাসি-তামাশা করা যাবে না। অন্যের ধর্মকে দেখতে হবে শ্রদ্ধার চোখে।
দ্বীনের জন্যেই তো আল্লাহ্ আসমান-যমীন সৃষ্টি করেছেন।
জান্নাত-জাহান্নাম প্রস্তুত করেছেন। দ্বীন ইসলাম বা বা এর কোন বিধান নিয়ে অথবা দ্বীনদ্বারদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ সাথে সাথে ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টা করলে মানুষ ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। আল্লাহ্ বলেন:
إِنَّ الَّذِينَ أَجْرَمُوا كَانُواْ مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا يَضْحَكُونَ
যারা অপরাধী, তারা বিশ্বাসীদেরকে উপহাস করত। সুরা মুতাফফিফীন ৮৩:২৯
وَإِذَا مَرُّواْ بِهِمْ يَتَغَامَزُونَ
এবং তারা যখন তাদের কাছ দিয়ে গমন করত তখন পরস্পরে চোখ টিপে ইশারা করত। সুরা মুতাফফিফীন ৮৩:৩০
وَإِذَا انقَلَبُواْ إِلَى أَهْلِهِمُ انقَلَبُواْ فَكِهِينَ
তারা যখন তাদের পরিবার-পরিজ নের কাছে ফিরত, তখনও হাসাহাসি করে ফিরত। সুরা মুতাফফিফীন ৮৩:৩১
وَإِذَا رَأَوْهُمْ قَالُوا إِنَّ هَؤُلَاء لَضَالُّونَ
আর যখন তারা বিশ্বাসীদেরকে দেখত, তখন বলত, নিশ্চয় এরা বিভ্রান্ত। সুরা মুতাফফিফীন ৮৩:৩২
আমরা যারা আল্লাহর প্রদত্ত দ্বীন পালনে সর্বদা প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছি সমাজের সাথে, পরিবারের সাথে, নিজের নফসের সাথে আল্লাহ আমাদের মনোবল আরো বাড়িয়ে দিন।
নিকৃষ্ট মানুষের ঠাট্টা-বিদ্রুপে না আমাদের মনোবল কখনো ক্ষুণ্ণ হবে না আমার ধর্মের বিধানের গুরুত্ব কমবে। কাক্ষিত কালেও এ সম্ভব হবে না।
ইসলাম নিজে সকল মানবজাতিকে আলো ছড়িয়েই যাবে, চাই যে এ আলো দিয়ে আলোকিত হবে নতুবা যারা নিজেদের বিশ্রি অন্ধকারে আচ্ছন্ন করে রাখবে।
আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।
দুনিয়াতে যারা নিজেদের ভালবাসাকে কুফরির মাঝে স্থান দিয়েছে – আল্লাহ যদি তাদের ক্ষমা না করেন তাদের পরিনত স্থান জাহান্নাম।
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে:
وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ
তারা আরও বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম, তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না। সুরা মুলক ৬৭:১০
হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর যদি অজান্তে শিক হয়ে থাকে তবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।