
ইসলাম শান্তির ধর্ম। মুসলমান কাকে বলে ? ইসলাম কি ?
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম।
ইসলামকে বিশ্বের সবচেয়ে শান্তির ধর্ম বলে ঘোষণা করেছে বিশ্বের বড় বড় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন গুলো তারা যৌথভাবে বিশ্বের সবগুলো ধর্ম নিয়ে গবেষণা চালায়।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ধর্ম কোনটি তা খতিয়ে বের করা।
এক সংবাদ সম্মেলনে একটি ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগের প্রধান বলেন;
আমরা ছয় মাসব্যাপী গভীর গবেষণা ও বিশ্লেষণের পর আমরা এই উপসংহারে উপনীত হয়েছি যে, ইসলামই বিশ্বের সবচেয়ে শান্তির ধর্ম।
আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব।
কুরআন মাজীদের সূরা মাইদাতে আল্লাহ তায়ালা ইসলাম শান্তির ধর্ম তার শিক্ষা ও বিধানের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেন এভাবে;
…তোমাদের কাছে আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব।
যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে চায় আল্লাহ তাদের শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং অন্ধকারসমূহ থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন নিজ ইচ্ছায়। আর তাদেরকে পথ দেখান সরল পথ।
এ আয়াতে ‘সালাম’ শব্দ আছে। সাধারণত ‘সালাম’ শব্দের অর্থ করা হয় ‘শান্তি’।
এ অর্থ ভুল নয়, তবে সূক্ষ্ম অর্থ হচ্ছে ‘মুক্তি’।
বিপদ ও অশান্তি থেকে মুক্তিই তো শান্তির বড় উপায়। ইসলাম মানুষকে বিপদ ও অশান্তি থেকে মুক্তির পথ প্রদর্শন করে।
তাই ইসলাম শান্তির ধর্ম।
এর আরো কারন রয়েছে যে, ইসলামে একটি আমল রয়েছে যার নাম হচ্ছে নামায। আর এ নামায মানুষকে সমস্ত অশলীল অপকর্ম থেকে বাচিয়ে রাখে।
দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা কোরআনের সূরা মায়িদাতে তাঁর বান্দাদের জন্য ইসলাম ধর্মকে মনোনীত করে
ঘোষনা দিয়ে বলেন;
‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম,
তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।
ইসলাম শান্তির ধর্ম কখনো অশান্তি-বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টিকে প্রশ্রয় দেয় না। সমাজিক জীবনে শান্তি ও শৃংঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উপর ইসলাম বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে।
অশান্তি-বিশৃংঙ্খলা তথা ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকে আল কোরআনে হত্যার চেয়েও গুরুতর পাপ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
এ পাপ আমাদের সমাজের শিরায় শিরায় প্রবিষ্ট হয়ে আছে।
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এ পাপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রয়োজন ও এর গুরুত্ব অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
কেননা একটি ফেতনা বা অশান্তি সমাজে অসংখ্য ফেতনা-অশান্তি ও হাঙ্গামা জন্ম দিতে পারে।
অশান্তি সৃষ্টির বিরুদ্ধে ইসলাম রয়েছে কঠোর অবস্থানে।
সামাজিকতা, স্বভাব-চরিত্র বা আচার-আচরণ, সৎকাজের আদেশ বা অসৎকাজের নিষেধ।
এককথায় মানবজীবনের সব বিষয়ে ইসলামের যে বিশ্বাস ও বিধান তা গ্রহণ ও অনুসরণের মূল প্রেরণা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখিরাতের নাজাত।
এ কারণে ইসলামের করণীয়-বর্জনীয় সকল বিষয়ের সাথে যে পরিভাষাগুলো জড়িত তা হচ্ছে ছওয়াব ও গুনাহ, জান্নাত ও জাহান্নাম, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি।
কে না জানে শান্তি ও প্রশান্তির কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে মানুষের মন। মনে যদি শান্তি থাকে তাহলে গোটা সত্তায় শান্তি বিরাজ করে।
আর মন যদি অশান্ত হয় মানবের গোটা সত্তা অশান্তিতে আক্রান্ত হয়।
মনের শান্তির একমাত্র উপায় আল্লাহর স্মরণ, তাঁর প্রতি আস্থা ও সমর্পণ এবং জীবন ও জগতের সকল বিষয়ে তাঁর ফয়সালায় সন্তুষ্টি।
এই সম্পদ যে পেয়েছে জীবনে তার দুঃখ-কষ্ট থাকতে পারে, উপায়-উপকরণের স্বল্পতাও থাকতে পারে কিন্তু অশান্তি থাকে না।
কারণ মহান আল্লাহ তার হৃদয়কে পরিতুষ্টি ও পরিতৃপ্তি দ্বারা পূর্ণ করে দেন।
আল্লাহর প্রতি আস্থার অবলম্বনে তাঁর হৃদয় থাকে ভারমুক্ত ও শঙ্কামুক্ত। পক্ষান্তরে এই সম্পদ যে পায়নি ভোগের সকল উপকরণের মাঝেও সে শান্তি খুঁজে পায় না।
বিবেকের দংশন থেকে মুক্তি
অশান্তির আগুনে দগ্ধ হতে থাকে। কারণ তুষ্টি ও আনন্দ, আস্থার অবলম্বন ও ভারমুক্ততা এবং বিবেকের দংশন থেকে মুক্তির মতো শান্তির উপকরণগুলো থেকে তার হৃদয়-মন বঞ্চিত থাকে।
মনের এই ক্ষোভ, অতৃপ্তি ও হাহাকারের বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার কর্ম ও আচরণে।
তাইত অমুসলিম সম্প্রদায়কে তবলিগ করার জন্য ইসলামের যে নির্দেশ তার একটি কারণ এই,
একজন মুসলমান যে জিনিসটি সত্য মনে করে সে সম্পর্কে অপর লোককে অবহিত করা তার মানবিক দায়িত্ব।
মানব কল্যাণ ও সৌভ্রাতৃত্বের এটা একটি অপরিহার্য দিক।
এই প্রেরণা অনুভতি নিয়েই মুসলমানরা ইসলাম প্রচারে লিপ্ত হয়েছিলেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁরা দুনিয়াময় ইসলাম প্রচারে সক্ষম হয়েছে।
Leave a Reply